সুভদ্রা যোজনা হলো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কর্তৃক ওড়িশায় মহিলাদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে চালু করা একটি প্রকল্প। ১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে, নিজের জন্মদিন উপলক্ষে এই প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন তিনি। দেবী সুভদ্রার নামে এই যোজনার নামকরণ করা হয়েছে, যিনি ভগবান জগন্নাথের বোন হিসেবে পরিচিত। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো, ২১ থেকে ৬০ বছর বয়সী প্রায় ১ কোটি মহিলাকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা। সুভদ্রা যোজনার মাধ্যমে যোগ্য মহিলারা আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে মোট ৫০,০০০ টাকা আর্থিক সাহায্য পাবেন।
সুভদ্রা যোজনার মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ:
- উদ্বোধনের তারিখ: ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪
- লক্ষ্যমাত্রা: ১ কোটি মহিলা
- যোগ্যতার সীমা: ২১ থেকে ৬০ বছর বয়সী মহিলা
- মোট আর্থিক সহায়তা: ৫০,০০০ টাকা (৫ বছরে)
- কিস্তির পরিমাণ: বার্ষিক ১০,০০০ টাকা, দুটি সমান অংশে প্রদান
- প্রথম কিস্তির তারিখ: রক্ষা বন্ধন
- দ্বিতীয় কিস্তির তারিখ: আন্তর্জাতিক নারী দিবস
- নিবন্ধন শুরু: ১লা সেপ্টেম্বর, ২০২৪
- প্রধানত প্রাপ্তিস্থান: জন ধন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে DBT এর মাধ্যমে সরাসরি স্থানান্তর
সুভদ্রা যোজনার উদ্দেশ্য ও ভূমিকা
এই প্রকল্পটি মূলত মহিলাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার জন্য তৈরি করা হয়েছে। মহিলাদের জন ধন অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ডিজিটাল লেনদেন সহজ করার জন্য এই যোজনার মাধ্যমে সরাসরি আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। ইতিমধ্যেই প্রায় ৫০ লক্ষ মহিলা এই প্রকল্পের জন্য নিবন্ধন করেছেন এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১০ লক্ষেরও বেশি মহিলার অ্যাকাউন্টে তহবিল ইলেকট্রনিকভাবে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনায় একাজ করতেই হবে! নাহলে সমস্যায় পড়বেন আপনিও…
আর্থিক সহায়তার কাঠামো
এই যোজনার অধীনে, মহিলারা ১০,০০০ টাকার বার্ষিক আর্থিক সহায়তা পাবেন যা দুটি সমান কিস্তিতে বিতরণ করা হবে। প্রথম কিস্তি দেওয়া হবে রাখি পূর্ণিমার দিনে এবং দ্বিতীয় কিস্তি আন্তর্জাতিক নারী দিবসে। মহিলাদের জন্য এই প্রকল্প চালু করলেন ভারতের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
কিস্তি | পরিমাণ | তারিখ |
---|---|---|
প্রথম কিস্তি | ৫,০০০ টাকা | রাখি পূর্ণিমা |
দ্বিতীয় কিস্তি | ৫,০০০ টাকা | আন্তর্জাতিক নারী দিবস |
নিবন্ধন পদ্ধতি
১লা সেপ্টেম্বর ২০২৪ থেকে সুভদ্রা যোজনার নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সকল আবেদনকারীদের জন্য ই-কেওয়াইসি সম্পূর্ণ করা বাধ্যতামূলক। অনুমোদনের পর, সুবিধাভোগীদের জন্য একটি সুভদ্রা ডেবিট কার্ড প্রদান করা হবে। এই কার্ডের মাধ্যমে সুবিধাভোগীরা সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।
যোগ্যতার শর্তাবলী
সুবিধাভোগী হওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতার শর্তাবলী রয়েছে:
- ২১ থেকে ৬০ বছর বয়সী মহিলা
- ধনী পরিবার বা সরকারী কর্মচারীরা এই প্রকল্পের জন্য যোগ্য হবেন না।
- যেসব মহিলা অন্য কোনও সরকারি প্রকল্পের অধীনে প্রতি বছর ১৮,০০০ টাকা সহায়তা পাচ্ছেন, তারা অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
সুভদ্রা যোজনার প্রভাব
অর্থনীতিবিদদের মতে, সুভদ্রা যোজনার অধীনে মহিলাদের যে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, তা দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতিতে একটি গুণক প্রভাব ফেলতে পারে। প্রত্যেক মহিলার আর্থিক সাহায্য ৫০,০০০ টাকা হলেও, এর মাধ্যমে অর্থনীতিতে ২.৫ লক্ষ কোটি টাকার কাছাকাছি অবদান রাখতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সুবিধাভোগীদের জন্য প্রণোদনা
প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও শহুরে স্থানীয় সংস্থা অঞ্চল থেকে ডিজিটাল লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ ১০০ জন সুবিধাভোগীকে ৫০০ টাকার প্রণোদনা দেওয়া হবে।
সুভদ্রা যোজনার সুফল
- মহিলাদের আর্থিক স্বাবলম্বন
- সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে তহবিল স্থানান্তর
- ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যমে সুবিধা গ্রহণ
- নারীদের জন্য সুরক্ষিত আর্থিক ভবিষ্যৎ
সুভদ্রা যোজনার বাজেট ও বরাদ্দ
এই প্রকল্পের জন্য পাঁচ বছরের জন্য মোট ৫৫,৮২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এর ফলে ওড়িশার মহিলাদের অর্থনৈতিক উন্নতি ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হবে।
অর্থবছর | বরাদ্দকৃত বাজেট |
---|---|
২০২৪-২০২৫ | ১১,০০০ কোটি টাকা |
২০২৫-২০২৬ | ১১,০০০ কোটি টাকা |
২০২৬-২০২৭ | ১১,০০০ কোটি টাকা |
২০২৭-২০২৮ | ১১,০০০ কোটি টাকা |
২০২৮-২০২৯ | ১১,৮২৫ কোটি টাকা |
প্রশ্নোত্তর:
প্রশ্ন ১: সুভদ্রা যোজনার অধীনে মোট কত টাকা মহিলারা পাবেন?
উত্তর: সুভদ্রা যোজনার অধীনে পাঁচ বছরে মোট ৫০,০০০ টাকা মহিলারা পাবেন।
প্রশ্ন ২: সুভদ্রা যোজনার প্রথম কিস্তি কবে প্রদান করা হবে?
উত্তর: প্রথম কিস্তি রাখি পূর্ণিমার দিনে প্রদান করা হবে।
প্রশ্ন ৩: সুভদ্রা যোজনার জন্য কীভাবে নিবন্ধন করা যাবে?
উত্তর: মহিলারা ই-কেওয়াইসি সম্পন্ন করে নির্ধারিত ব্যাঙ্ক বা সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্রে নিবন্ধন করতে পারবেন।
প্রশ্ন ৪: সুভদ্রা যোজনার অধীনে প্রাপ্ত তহবিল কোন অ্যাকাউন্টে জমা হবে?
উত্তর: তহবিল জন ধন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি জমা হবে।