পশ্চিমবঙ্গ সরকার আবারও শিক্ষার্থীদের জন্য বিশাল ওয়েসিস স্কলারশিপ 2024 সুযোগ নিয়ে এসেছে। এবার সরকারি ওয়েসিস স্কলারশিপের জন্য অনলাইন আবেদন শুরু হয়েছে, যার মাধ্যমে সফল আবেদনকারীরা ৫,০০০ টাকা থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত অর্থ সাহায্য পেতে পারেন।
এই স্কলারশিপ মূলত রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের SC, ST, ও OBC শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত। যারা সম্প্রতি তাদের শেষ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন এবং নতুন ক্লাসে ভর্তি হয়েছেন, তারা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আজকের প্রবন্ধে, এই স্কলারশিপের আবেদন প্রক্রিয়া, যোগ্যতা, এবং বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করা হবে।
ওয়েসিস স্কলারশিপ 2024 (Oasis Scholarship) কি
ওয়েসিস স্কলারশিপ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শ্রেণী কল্যাণ ও উন্নয়ন দফতরের অধীনে পরিচালিত একটি প্রকল্প। এই স্কলারশিপের মাধ্যমে SC, ST, এবং OBC সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি বছর ৫,০০০ টাকা থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়। বিশেষ করে যারা আর্থিকভাবে অসচ্ছল, তারা এই স্কলারশিপের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষা অব্যাহত রাখতে পারবেন। এর ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাজীবনে আরও মনোযোগ দিতে পারবে এবং তাদের ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।
ওয়েসিস স্কলারশিপ কারা আবেদন করতে পারবে
ওয়েসিস স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হলে শিক্ষার্থীকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। এর পাশাপাশি, আবেদনকারীর SC, ST বা OBC সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হতে হবে।
এখানে কোনও নির্দিষ্ট নম্বর পাওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই, কেবলমাত্র শেষ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই আবেদন করা যাবে। যারা বর্তমানে নতুন ক্লাসে ভর্তি হয়েছেন, তারা এই স্কলারশিপের জন্য যোগ্য।
অর্থাৎ, কোনও শিক্ষার্থী যদি তার শেষ পরীক্ষায় পাশ করে থাকে এবং বর্তমানে উচ্চতর ক্লাসে ভর্তি থাকে, তাহলে সে এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারে।
ওয়েসিস স্কলারশিপের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অনলাইনে সম্পন্ন করা যাবে। এই প্রক্রিয়াটি শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই সহজ করা হয়েছে। আবেদন করতে হলে, প্রথমে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে। ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর, ‘Students Corner‘ বিভাগে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করার সময়, শিক্ষার্থীকে তার জেলার নাম সিলেক্ট করতে হবে। এরপর একটি পপ আপ মেসেজ আসবে যেখানে আবেদন প্রক্রিয়ার বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া থাকবে।
আবেদন প্রক্রিয়ার ধাপগুলি:
- কাস্ট সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশন: প্রথমেই আবেদনকারীকে তার কাস্ট সার্টিফিকেটের ভেরিফিকেশন করতে হবে।
- ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান: নাম, জন্মতারিখ, আধার নম্বর, এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য প্রদান করতে হবে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট অবশ্যই আধারের সাথে লিঙ্ক থাকতে হবে।
- অভিভাবকের তথ্য: এরপর, অভিভাবকের নামসহ বাকি তথ্য পূরণ করতে হবে।
- বার্ষিক আয়ের শংসাপত্র: পরিবারের বার্ষিক আয়ের শংসাপত্র, মোবাইল নম্বর, এবং স্কুলের নাম পূরণ করতে হবে।
- শেষ পরীক্ষার তথ্য: শেষ পরীক্ষার তথ্য দিয়ে পাসওয়ার্ড সেট করলে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হবে। এরপর আবেদনকারী একটি অ্যাকনলেজমেন্ট স্লিপ ডাউনলোড করতে পারবেন।
- ফর্ম সাবমিশন: রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করার পর, আবেদনকারীকে লগইন করে বাকি তথ্য পূরণ করতে হবে এবং “Verify and Lock Application” এ ক্লিক করতে হবে। এরপর মোবাইলে একটি OTP আসবে, সেটি দিয়ে ফর্ম সাবমিট করতে হবে। ফর্ম সাবমিট করার পর, অ্যাপ্লিকেশন ফর্মটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করতে হবে।
- ফর্ম জমা: অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম প্রিন্ট করে সেটি নিজের স্কুল বা BDO অফিসে জমা করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ Leave of Absence application নতুন ছুটি রাজ্য সরকারের।
ওয়েসিস স্কলারশিপের জন্য আবেদন করার সময়সীমা এখনও সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়নি। তবে, যেহেতু এই স্কলারশিপের আবেদন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে, তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আবেদন জমা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে, শিক্ষার্থীরা সময়মতো তাদের বৃত্তি প্রাপ্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে পারবেন।
ওয়েসিস স্কলারশিপ পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সাহায্য হিসেবে গণ্য হয়। এই স্কলারশিপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষার খরচ মেটাতে সক্ষম হবে এবং উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে আরও উন্নতি করতে পারবে। যারা এই স্কলারশিপের জন্য যোগ্য, তারা অবশ্যই দ্রুত আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাদের সুযোগের সদ্ব্যবহার করবেন।
আবেদনের অফিসিয়াল লিঙ্ক: ওয়েসিস স্কলারশিপে আবেদন করুন
আশা করি, এই প্রবন্ধটি শিক্ষার্থীদের ওয়েসিস স্কলারশিপের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সব ধরনের তথ্য প্রদান করতে পেরেছে। কোনও প্রকার প্রশ্ন থাকলে, অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের সহায়তা পেজে যেতে পারেন।